কুমিল্লা বিভাগ বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের একটি অন্যতম প্রশাসনিক বিভাগ। এটি দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত এবং দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের মধ্যে গণ্য হয়। কুমিল্লা বিভাগের উন্নয়ন, ঐতিহাসিক গুরুত্ব, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য তা বিশেষভাবে পরিচিত।
ভৌগোলিক অবস্থান
কুমিল্লা বিভাগ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত এবং এর মধ্যে রয়েছে ৪টি জেলা: কুমিল্লা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর এবং ফেনী। এই বিভাগটি চট্টগ্রাম বিভাগ এবং বরিশাল বিভাগের সাথে সীমান্ত ভাগ করে।
প্রশাসনিক কাঠামো
কুমিল্লা বিভাগ মোট ৪টি জেলা নিয়ে গঠিত:
1. **কুমিল্লা জেলা**
2. **চাঁদপুর জেলা**
3. **লক্ষ্মীপুর জেলা**
4. **ফেনী জেলা**
এই চারটি জেলার মোট উপজেলাগুলোর সংখ্যা ৪০টিরও বেশি। প্রতিটি জেলা একটি জেলা প্রশাসক দ্বারা পরিচালিত হয়, এবং বিভাগের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কর্মকর্তা হলেন কুমিল্লা বিভাগের **বিভাগীয় কমিশনার**।
অর্থনীতি
কুমিল্লা বিভাগের অর্থনীতি মূলত কৃষি ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমের উপর নির্ভরশীল। ধান, পাট, গম, চা, এবং অন্যান্য কৃষিজ পণ্য এখানকার প্রধান ফসল। চট্টগ্রাম বন্দর নিকটবর্তী হওয়ায় এই বিভাগে বাণিজ্যিক কার্যক্রমও বেশ উন্নত। বিশেষ করে কুমিল্লা শহর এবং চাঁদপুরের বাজারে পণ্য বিপণন এবং শিল্পের বিস্তার ঘটেছে।
শিক্ষা
কুমিল্লা বিভাগে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল ও মাদ্রাসা। **কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়**, **চাঁদপুর সরকারি কলেজ**, **ফেনী সরকারি কলেজ** ইত্যাদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বিভাগটির শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য
কুমিল্লা বিভাগ তার ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। এখানে প্রচলিত বিভিন্ন উৎসব, মেলা এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলা সংস্কৃতি উদযাপন করা হয়। বিশেষত **চাঁদপুরের হরিপুর মেলা**, **কুমিল্লার লাকসাম মেলা** এবং **ফেনীর দেড়শত মেলা** যেমন উল্লেখযোগ্য।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য
কুমিল্লা বিভাগের প্রাকৃতিক দৃশ্য অত্যন্ত মনোরম। এখানে বহু নদী, খাল, বিল এবং বনাঞ্চল রয়েছে, যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে। বিশেষ করে **মেঘনা নদী**, **উজানী হাওর**, **চাঁদপুরের মেঘনা নদীর তীর** এবং **ফেনী জেলার মনোরম প্রকৃতি** প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে জনপ্রিয়।
কুমিল্লা বিভাগ দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক অঞ্চল, যার ভৌগোলিক অবস্থান, অর্থনৈতিক অবস্থা, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেশব্যাপী পরিচিত। এই বিভাগের সমৃদ্ধ ইতিহাস, শিক্ষা, সংস্কৃতি, এবং শিল্পের বিকাশ দেশের উন্নয়নে অবদান রেখে চলেছে।